নারীর প্রতি সহিংসতাঃ যেন আরেক মহামারি

নারীর প্রতি সহিংসতা অন্যান্য আরও দশটা  সমস্যাগুলোর মতোই গুরুত্ব বহন করে। এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও আমরা বলতে পারি না যে, নারীরা সুরক্ষিত। আমাদের নারীরা রাস্তাঘাটে, অফিসে এমনকি বাড়িতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজের কাজ করতে পারছে- এমন দাবিও আমরা করতে পারি না। উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে যেন নারীর প্রতি সহিংসতাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ যেন আরেক মহামারি। এর শেষ কোথায়? আদৌ কি এর শেষ আছে? সমাজবিজ্ঞানী, নৃবিজ্ঞানী সবাই কাজ করে যাচ্ছেন নারী নির্যাতন নিয়ে। কিন্তু, সকল পদক্ষেপ যেন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের নারীর প্রতি সহিংসতার চিত্র যদি আমরা দেখতে যাই, তাহলে আতঙ্কিত হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। বর্তমানে নারীর প্রতি সহিংসতা যেমন বেড়েছে তেমনি তা বহুমাত্রিক আকার ধারণ করেছে। অবস্থাদৃষ্টে এটা বলা যায়, সমাজে যেন নারীর প্রতি সহিংসতা একটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে গেছে। নারীর প্রতি সহিংস ঘটনা ঘটলেও নারীর দিকেই আঙুল ওঠে। নির্যাতনের শিকার নারীর পোশাক ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মুখরোচক আলোচনা উঠে এবং শেষে তাকেই দায়ী করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারীর পাশে সমাজ ও রাষ্ট্র তো নয়ই পরিবারও দাঁড়ায় না। তাই তো নারীর প্রতি সহিংসতা হলে তেমন প্রতিরোধ ও প্রতিক্রিয়া গড়ে ওঠে না। অপরাধের শাস্তির জন্য আইন প্রয়োগ হচ্ছে না। আইন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে কার্যকর হচ্ছে না। এ সংস্কৃতি অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আবহমান কাল ধরেই বাংলাদেশের সমাজ পিতৃতান্ত্রিক সমাজ। আর এই পুরুষতন্ত্রের ফসলই নারীর প্রতি সহিংসতা। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী সবসময়ই অবলা,অবহেলিত। এই সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা শুরু হয় যৌতুকের জন্য, কন্যাসন্তান জন্মদানের জন্য, রান্নায় একটু লবন বেশি দেওয়ার জন্য। এছাড়াও অনেক তুচ্ছ ও অহেতুক কারনে নারীর উপর অত্যাচারের ঝড় নামে।
দেশের শীর্ষস্হানীয় নারী সংগঠন মহিলা পরিষদ ১৩টি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকাতে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে সারাদেশে নারী ও কন্যাশিশুর নির্যাতনের তথ্য সংরক্ষণ করে। সংরক্ষিত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২০, ২০২১ এবং ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত নারীর প্রতি সংগঠিত অপরাধ বৃদ্ধির হার প্রায় ২৪ শতাংশ। তবে নির্যাতনের হার শহরের চাইতে  গ্রামেই বেশি। খবরে কিংবা খবরের কাগজে যেই সংবাদ পাওয়া যায় প্রকৃত চিত্র তার চাইতে আরো ভয়ানক।
শুধুমাত্র পুরুষতন্ত্র যে নারীর প্রতি সহিংসতার জন্য দায়ী তা কিন্তু নয়। অর্থনৈতিক বিষয়টাও অনেকখানি নারীর প্রতি সহিংসতার জন্য দায়ী। আমাদের এই উপমহাদেশের পিতামাতার সন্তান জন্মদানের পূর্বেই ভেবে বসে থাকেন, বৃদ্ধ বয়সে ছেলেসন্তানই তাদের অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হয়ে দেখাশুনা করবে। ছেলেরাই বংশের বাতি। তাই জন্মের পূর্বে মায়ের গর্ভের যে ভ্রুণ কন্যাসন্তানের হয় তার আর পৃথিবীর মুখ দেখা হয় না। জন্মের পূর্বে যেমন ভ্রুণটা কন্যাসন্তান হওয়ার দায় এড়াতে পারে না, জন্মের পরেও সে নারী হওয়ার দায় এড়াতে পারে না। রাস্তাঘাটে, বিদ্যালয়ে অফিসে, বাড়িতে এমনকি অনলাইনেও হেনস্তার মুখোমুখি হয়। কখনো অফিসের সহকর্মী, কখনো স্বামী, কখনো বন্ধু, কখনো বা সমাজের আর পাঁচটা পুরুষের দ্বারা নির্যাতনের সম্মুখীন হতে থাকে নারীরা।
জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধের জন্য আমাদের উচিত নারী পুরুষ সম্মিলিত ভাবে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করা। আমাদের উচিত বৈষম্য দূর করে একে-অপরের সহযোগী হয়ে উঠা। একমাত্র সহযোগী হয়ে কাজ করলেই নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ নতুবা এই মহামারি কাটিয়ে উঠা অনেক কঠিন হবে।

Similar Posts

20 Comments

  1. বিদেশে বসে সবাই অনেক বড় বড় কথা বলতে পারে। পারলে একবার দেশে আয় না? says:

    বিদেশে বসে সবাই অনেক বড় বড় কথা বলতে পারে। পারলে একবার দেশে আয় না?

  2. শুয়োরের বাচ্চা চড়াইতে চড়াইতে মেরে ফেলবো। says:

    শুয়োরের বাচ্চা চড়াইতে চড়াইতে মেরে ফেলবো।

  3. বেয়াদবির একটা সীমা থাকা উচিত। তোরে শাস্তি দেওয়ার সময় আসছে। says:

    বেয়াদবির একটা সীমা থাকা উচিত। তোরে শাস্তি দেওয়ার সময় আসছে।

  4. আপনাদের মতো লেখকদের কারনেই এই ঘুণেধরা সমাজ আজো অল্প ভালো আছে। says:

    আপনাদের মতো লেখকদের কারনেই এই ঘুণেধরা সমাজ আজো অল্প ভালো আছে।

  5. হালার পো তোরে না মানা করসিলাম লেখালেখি করতে? তারপরও? দাড়া তোরে মজা বুঝানোর সময় হয়ে গেসে।। says:

    হালার পো তোরে না মানা করসিলাম লেখালেখি করতে? তারপরও? দাড়া তোরে মজা বুঝানোর সময় হয়ে গেসে।।

  6. আজকের সময়ে এরকম সাহসী লেখা খুবই জরুরি। কারো কথা শুনবেন না, লেখালেখি চালিয়ে যান। says:

    আজকের সময়ে এরকম সাহসী লেখা খুবই জরুরি। কারো কথা শুনবেন না, লেখালেখি চালিয়ে যান।

  7. সময় থাকতে ফালতু লেখালেখি বন্ধ করে ফেল নাইলে কিন্তু ভালো হবেনা বলে দিলাম। says:

    সময় থাকতে ফালতু লেখালেখি বন্ধ করে ফেল নাইলে কিন্তু ভালো হবেনা বলে দিলাম।

  8. তোর লেখা দেখেই বুঝা যায় তুই একটা ভারতের দালাল

  9. খানকির পোলা, এত লম্বা লম্বা কথা না বলে একবার দেশে আয়। হেফাজতের ভাইয়েরা অনেকদিন রক্তের গন্ধ পায়না।

  10. ভাই আপনার লেখা আমার খুব ভালো লাগে। অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে লিখতে পারেন আপনি। আপনার লেখা পড়ে অনেক অনুপ্রাণিত হই। আশা করি লেখালেখি চালিয়ে যাবেন।

  11. কাফের ও মুরতাদের চিন্তাগুলো সব সময় ধর্ম হীন হয়। কেন হয় বলতে পারিস ওহে কাফেরের বাচ্চা?

  12. তুই একটা ইহুদীর দালাল। থাকস লন্ডনে আর গালাগালি করস ইসলামকে। তোর মতো নাস্তিক-মুরতাদের বাঁচার কোনো অধিকার নাই। তুই মরবি আমাদের হাতে। চাপাতি নিয়া অপেক্ষায় আছি।

  13. একবার দেশে আয়। আমরা তৌহিদি জনতা শফি হুজুরের নেতৃত্বে তোদের দেখে নেব

  14. লেখাটা কিন্তু চমৎকার হয়েছে। ভালো লাগলো। অনেক চিন্তার খোরাক জাগালো। ভাই এইভাবে লিখে যাবেন সব সময়।

  15. কাফের মুরতাদ। তোর আর নিস্তার নেই। তুই আমাদের নবীকে নিয়ে একের পর এক কথা বলেই যাচ্ছিস। এইবার তোর মৃত্যুর দিন গুনতে থাক।

  16. তোর শরীর থেকে ধড় আলাদা করে ফেলব মুরতাদ নাস্তিকের বাচ্চা

  17. তোকে যেদিন পিস পিস করে কেটে তোর রক্তে গোসল করব সেদিন-ই আসলে আমার জীবনের সব স্বাদ পূর্ণ হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *